Tafsir Ibn Kasir তাফসীর ইবনে কাসীর – ইমাম্মুদিন ইবনু কাসীর (রহঃ) (PDF Bangla Boi)
Tafsir Ibn Kasir তাফসীর ইবনে কাসীর বই এর অনুবাদক এর কিছু কথা :
যে পবিত্র কুরআন মানুষের সর্ববিধ রােগে ধনন্তরী মহৌষধ, যার জ্ঞানের পরিধি অসীম অফুরন্ত, যার বিষয়
বস্তুর ব্যাপক আকাশের সমস্ত নীলিমাকেও অতিক্রম করেছে, যার ভাব গাম্ভীর্য অতলস্পর্শী মহাসাগরের
গভীরতাকেও হার মানিয়েছে, সেই মহাগ্রন্থ কুরআন নাযিল হয়েছে সুরময় কাব্যময় ভাষা আরবীতে।
সুতরাং এর ভাষান্তরের বেলায় যে সাহিত্যশৈলী ও প্রকাশ রীতিতে বাংলা ভাষা প্রাঞ্জল, কাব্যময় ও সুরময় হয়ে
উঠতে পারে, তার সন্ধান ও অভিজ্ঞতা রাখেন উভয় ভাষায় সমান পারদর্শী স্বনামধন্য লেখক ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ
আলেমবৃন্দ। তাই উভয় ভাষায় অভিজ্ঞ হক্কানী আলেম, নায়েবে নাবী ও সাহিত্য শিল্পীদের পক্ষেই কুরআনের
সার্থক তরজমা ও তাফসীর সম্ভবপর এবং আয়ত্তাধীন।
মানবকূলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ তারাই যারা পবিত্র কুরআনের পঠন-পাঠনে নিজেকে নিয়ােজিত করেন
সর্বতােভাবে। তাই নাৰী আকরামের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই পুতঃবাণী সকল যুগের জ্ঞান-তাপস
ও মনীষীদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে পাক কুরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ প্রণয়ন করার কাজে। তাফসীর
ইবুন কাসীর হচ্ছে কালজয়ী মুহাদ্দিস মুফাসসির যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী আল্লামা হাফিয ইব্ন কাসীরের একনিষ্ঠ
নিরলস সাধনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের অমৃত ফল।
তাফসীর জগতে এ যে বহুল পঠিত সর্ববাদী সম্মত নির্ভরযােগ্য এক অনন্য সংযােজন ও অবিস্মরণীয় কীর্তি
এতে সন্দেহ সংশয়ের কোন অবকাশ মাত্র নেই। হাফিজ ইমাদুদ্দীন ইব্ন কাসীর এই প্রামাণ্য তথ্যবহুল,
সর্বজন গৃহীত ও বিস্তারিত তাফসীরের মাধ্যমে আরবী ভাষাভাষীদের জন্য পবিত্র কালামের সত্যিকারের
রূপরেখা অতি স্বচ্ছ সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন তাঁর ক্ষুরধার বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে।
এসব কারণেই এর অনবদ্যতা ও শ্রেষ্ঠত্বকে সকল যুগের বিদগ্ধ মনীষীরা সমভাবে অকপটে এবং একবাক্যে
স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই এই সসাগরা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে, সকল ধর্মীয়
প্রতিষ্ঠানের, এমনকি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায়তনের গ্রন্থাগারেও সর্বত্রই এটি বহুল পঠিত, সুপরিচিত, সমাদৃত
এবং হাদীস-সুন্নাহর আলােকে এক স্বতন্ত্র মর্যাদার অধিকারী।
তাফসীর ইব্ন কাসীরের এই ব্যাপক জনপ্রিয়তা, কল্যাণকারিতা এবং অপরিসীম গুরুত্ব ও মূল্যের কথা
সম্যক অনুধাবন করে আজ থেকে প্রায় অর্ধ শতাব্দী পূর্বে এটি উর্দুতে পূর্ণাঙ্গভাবে ভাষান্তরিত হয়ে প্রকাশিত
হয়েছিল। এই উর্দু অনুবাদের গুরু দায়িত্বটি অম্লানবদনে পালন করেছিলেন উপমহাদেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী
আলেম, প্রখ্যাত ভাষাবিদ ও বিদগ্ধ মনীষী মওলানা মুহাম্মাদ সাহেব জুনাগড়ী। এই উপমহাদেশের আনাচে
কানাচে দলমত নির্বিশেষে সকল মহলেই এটি সমাদৃত ও সর্বজন গৃহীত।
এই উর্দু এবং অন্যান্য ভাষায় ইব্ন কাসীরের অনুবাদের ন্যায় আমাদের বাংলা ভাষায়ও বহু পূর্বে এই
তাফসীরটির অনুবাদ হওয়া যেমন উচিত ছিল, তেমনি এর প্রকট প্রয়ােজন ছিল। কিন্তু এ সত্ত্বেও এই সংখ্যা
গরিষ্ঠের তুলনায় এবং এই প্রকট প্রয়ােজনের প্রেক্ষিতে আজ পর্যন্ত বাংলা ভাষায় কুরআন তরজমা ও
তাফসীর রচনার প্রয়াস নিতান্ত অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল।
দুঃখের বিষয় “ইবন কাসীরের ন্যায় এই তাফসীর সাহিত্যের একটি অতি নির্ভরযােগ্য বিশ্বস্ততম উপাদান এবং
এর অনুবাদের অপরিহার্য প্রয়ােজনকে এ পর্যন্ত শুধু মৌখিকভাবে উপলদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়ােজন
মেটানাের বা পরিপূরণের তেমন কোন বাস্তব পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ভাষান্তরের জগদ্দল পাথরই হয়ত প্রধান
অন্তরায় ও পরিপন্থী হিসাবে এতদিন ধরে পথ রােধ করে বসেছিল।
অথচ বাংলা ভাষাভাষী এই বিপুল সংখ্যক জনগােষ্ঠী ও অগণিত ভক্ত পাঠককুল স্বীয় মাতৃভাষায় এই অভিনব
তাফসীর গ্রন্থকে পাঠ করার স্বপ্নসাধ আজ বহুদিন থেকে মনের গােপন গহনে পােষণ করে আসছেন। কিন্তু
এই সুদীর্ঘ দিন ধরে মুসলিম সমাজের এই লালিত আকাংখা, এই দুর্বার বাসনা-কামনা আর এই সুপ্ত
অভিলাষকে চরিতার্থ করার মানসে ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মত জাতীয় সংস্থা ছাড়া আর কেহ এই দুর্গম
বন্ধুর পথে পা বাড়ানাের দুঃসাহস করেননি। দেশবাসীর ধর্মীয় জ্ঞান পিপাসা আজো তাই বহুল পরিমাণে
অতৃপ্ত।
বইয়ের বিবরণ :
নাম : Tafsir Ibn Kasir তাফসীর ইবনে কাসীর।
লেখক / লেখিকা : হাফেজ আল্লামা ইমাম্মুদিন ইবনু কাসীর (রহঃ) Hafez Allama Imamuddin Ibn Kathir (R :)।
অনুবাদঃ ডঃ মুহাম্মাদ মুজীবুর রহমান ।
বিভাগ / জেনার : তাফসীর।
ভাষা : বাংলা ।
বইয়ের ফর্ম্যাট : পিডিএফ
পৃষ্ঠাগুলির সংখ্যা : ৬৪০৪ পৃষ্ঠা।
পিডিএফ ফাইলের আকার : ৪০.২ মেগাবাইট
সূত্র : ইন্টারনেট।
সংগ্রহ করেছেন : BookBDarchive.com
লেখক সম্পর্কে কিছু কথা :
ইবনে কাসির ছিলেন একজন মুহাদ্দিস, ফকিহ, মুফাসসির ও ইতিহাসবিদ। তার পুরো নাম ইসমাঈল ইবন
উমর ইবন কাসীর ইবন দূ ইবন কাসীর ইবন দিরা আল-কুরায়শী। তিনি ‘’বিচার দিবসের পূর্বের চিহ্ন’’ নামক
বইয়ের লেখক। তার রচিত তাফসিরের জন্য তিনি অধিক প্রসিদ্ধ। এই তাফসিরকে প্রামাণ্য হিসেবে ধরা হয়।
ইবনে কাসির (রহ.) ৭০০ হিজরি মতান্তরে ৭০২ হিজরি সনে সিরিয়ার বসরান মাজদল নামক স্থানে জন্মগ্রহণ
করেন। তবে ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে তাঁর জন্মস্থান সিরিয়ার ‘মুজায়দিল’ নামক স্থানে উল্লেখ রয়েছে
(এটি দুর্বল মত)। ইবনে কাসির কুরায়শের বনী হাসালা শাখা গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
সন্ত্রান্ত এ গোত্রটির খ্যাতি রয়েছে। তাঁর পিতার নাম খতীব শিহাবউদ্দীন আবু হাফস উমর ইব্ন কাসীর। তিনি
বসবাস করতেন বুসরা নগরীর পশ্চিমে অবস্থিত ‘শারকাব্বীন’ গ্রামে। ইবন কাসীর (র) – এর সহোদর আবদুল
ওহহাব ৭০৭ হিজরীতে সপরিবারে দামেশকে চলে যান । তার সম্পর্কে ইবনে কাসীরের মন্তবত, “তিনি
আমাদের সহোদর এবং আমাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহবৎসল ছিলেন ।
“৪৬ ইবন কাসীর (র) হিজরী ৮ম শতাব্দীতে মামলুক সুলতানদের শাসনামলে তাঁর যৌবঙ্কাল অতিবাহিত
করেন । তাতারদের আক্রমণ, একাধিক দুর্ভিক্ষ, হৃদয়-বিদারক দুর্যোগগুলো তিনি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন ।
তখন দুর্ভিক্ষে লক্ষ-লক্ষ লোকের প্রাণহানি ঘটে । তিনি ফিরিঙ্গীদের সাথে সংঘটিত ক্রুসেড যুদ্ধগুলোও
দেখেছেন । ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের প্রতিষ্ঠা, শাসকদের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদি তাঁর সম্মুখেই সংঘটিত
হয় । এতদসত্ত্বেও এ যুগে শিক্ষা-দীক্ষা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে উৎকর্ষ সাধনের প্রবল উদ্দিপনা পরিলক্কজিত হয়
। আমীর-উমারাদের আগ্রহ এবং বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোর জন্যে অকাতরে দান করার কারণে প্রচুর
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বহুসংখ্যক গ্রন্থ রচিত ও সংকলিত হয় ।
সোর্স : আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া
আল্লামা যাহাবী -এর পর তিনি উন্মুসসা’ওয়াত তানাকুরিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তিনি
‘নুজায়বিয়ায়’ শিক্ষকতা করেন এবং ৭৪৮ হিজরী সনে ফাওকানী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। ইবনে
কাসির ৭৭৪ হিজরী সনের ২৬ শাবান বৃহস্পতিবার তার ইনতিকাল হয়। তার জানাযায় বহুসংখ্যক লোকের
সমাগম ঘটে। তার ওসীয়ত অনুসারে তার সর্বশেষ আবাসস্থল শায়খুল ইসলাম তকী উদ্দীন ইব্ন তাইমিয়্যা
(র)-এর কাছে তাকে দাফন করা হয়। যা দামেশকের বাব আন-নাসর-এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত।
তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া