Kankabatiy (কঙ্কাবতী ) by Troilokyanath Mukhopadhya-ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (PDF bangla Boi)
Kankabatiy-কঙ্কাবতী বাংলা সাহিত্যে অবিস্মরণীয় সৃষ্টি, এটা উদ্ভট রসের উপন্যাস। বাস্তব ঘটনা নিয়ে এর আরম্ভ কিন্তু শেষ
বাস্তবে এসেছে। কিন্তু মাঝে শুধুই অসম্ভবের গল্প। কঙ্কাবতীতে এই অসম্ভবের প্রশংসা করে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন: “এই উপন্যাসটি
মোটের উপর যে আমাদের বিশেষ ভাল লাগিয়াছে, তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। লেখক অতি সহজে সরল ভাষায় আমাদের
কৌতুক এবং করুণা উদ্রেক করিয়াছেন এবং বিনা আড়ম্বরে আপনার কল্পনাশক্তির পরিচয় দিয়াছেন। গল্পটি দুই ভাগে বিভক্ত।
প্রথম ভাগে প্রকৃত ঘটনা এবং দ্বিতীয় ভাগে অসম্ভব অমূলক অদ্ভুত রসের কথা। এইরূপ অদ্ভুত রূপকথা ভাল করিয়া লেখা
বিশেষ ক্ষমতার কাজ। অসম্ভবের রাজ্যে যেখানে কোনো বাঁধা নিয়ম কোনো চিহ্নিত রাজপথ নাই, সেখানে স্বেচ্ছাবিহারিণী
কল্পনাকে একটি নিগূঢ় নিয়মপথে পরিচালনা করিতে ণ্ডণপনা চাই। কারণ রচনার বিষয় বাহ্যতঃ যতই অসঙ্গত ও অদ্ভুত হউক
না কেন, রসের অবতারণা করিতে হইলে তাহাকে সাহিত্যের নিয়মবন্ধনে বাঁধিতে হইবে। রূপকথার ঠিক স্বরূপটি, তাহার বাল্য–
সারল্য, তাহার অসন্দিগ্ধ বিশ্বস্ত ভাবটুকু লেখক যে রক্ষা করিতে পারিয়াছেন, ইহা তাঁহার পক্ষে অল্প প্রশংসার বিষয় নহে।”
“উপাখ্যানের প্রথম অংশের বাস্তব ঘটনা এতদূর পর্যন্ত অগ্রসর হইয়াছে যে, মধ্যে সহসা অসম্ভব রাজ্যে উত্তীর্ণ হইয়া পাঠকের
বিরক্তি মিশ্রিত বিস্ময়ের উদ্রেক হয়। একটা গল্প যেন রেলগাড়িতে করিয়া চলিতেছিল, হঠাৎ অর্ধ রাত্রে অজ্ঞাতসারে বিপরীত
দিক হইতে আর একটা গাড়ি আসিয়া ধাক্কা দিল এবং সমস্তটা রেলচ্যুত হইয়া মারা গেল। পাঠকের মনে রীতিমত করুণা ও
কৌতূহল উদ্রেক করিয়া দিয়া অসতর্কে তাহার সহিত এরূপ রূঢ় ব্যবহার করা সাহিত্য–শিষ্টাচারের বহির্ভূত। এই উপন্যাসটি
পড়িতে পড়িতে ‘অ্যালিস ইন দি ওয়াণ্ডারল্যাণ্ড’ নামক একটি ইংরাজী গ্রন্থ মনে পড়ে; সেও এইরূপ অসম্ভব, অবাস্তব,
কৌতুকজনক বালিকার স্বপ্ন। কিন্তু তাহাতে বাস্তবের সহিত অবাস্তবের এরূপ নিকট সংঘর্ষ নাই। এবং তাহা যথার্থ স্বপ্নের ন্যায়
অসংলগ্ন। কিন্তু গ্রন্থখানি পড়িতে পড়িতে আমরা এই সকল ত্রুটি মার্জনা করিয়াছি।” সত্যই, ইংরেজী সাহিত্যে Gulliver’s Travels
বা Adventures of Alice in the Wonderland যে জাতীয় গ্রন্থ, বাংলা সাহিত্যে কঙ্কাবতীও তদনুরূপ।”
Book Details:
Name : Kankabatiy (কঙ্কাবতী ) .
Writer : Troilokyanath Mukhopadhya-ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়.
Category/Genre: Novel.
Language: Bengali
Format: PDF
Pages : 185 Pages.
PDF File Size: 1.17 MB
Source: Internet.
Collected By : BookBDarchive.com
লেখক সম্পর্কে কিছু কথা :
ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ২২ জুলাই, ১৮৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যের
ইতিহাসে তিনি ব্যঙ্গকৌতুক রসের স্রষ্টা হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। দরিদ্রতার সঙ্গে কঠোর সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠত
হয়েছিলেন। ত্রৈলোক্যনাথের কর্মজীবনের সূচনা ঘটে স্কুল শিক্ষকতার মাধ্যমে। পরবর্তীকালে তিনি বিভিন্ন ধরনের পেশায়
নিযুক্ত হন এবং ভারত সরকারের প্রতিনিধি হয়ে দুই বার ইউরোপের একাধিক রাষ্ট্রে কর্মসূত্রে কিছুকাল করে অবস্থান করেন।
মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও তিনি ফারসি, ওড়িয়া ইত্যাদি কয়েকটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তার রচিত বইগুলির মধ্যে
Kankabatiy-কঙ্কাবতী, ভূত ও মানুষ, ফোকলা দিগম্বর, ডমরু চরিত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ইংরেজি ভাষাতেও তিনি কয়েকটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।
সংসারের অসচ্ছল অবস্থার জন্য ১৮৬৫ সালে রোজগারের জন্য বাড়ি থেকে চলে যান এবং নানা দেশ ভ্রমণ করেন। প্রথমে
দ্বারকা (বীরভূম) উখড়া (রাণীগঞ্জ) এবং সিরাজগঞ্জ এর শাহজাদপুর এর প্রভৃতি স্থানে শিক্ষকতার কাজ করেন। কিন্তু কোথাও
কাজ পছন্দ না হওয়ায় কটকে চলে যান। ১৮৬৮ সালে কটকে জেলার পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর হন। কটকে ওড়িয়া ভাষা শিখে
ওড়িয়া ‘উৎকল শুভকরী’ নামে মাসিক পত্রিকার সম্পাদনা করেন। পুলিশের চাকরি করাকালীন বিখ্যাত স্যার উইলিয়াম হান্টার
সাহেবের সঙ্গে পরিচিত হন। হান্টার সাহেব এঁর কথাবার্তা এবং অগাধ পান্ডিত্যে সন্তুষ্ট হয়ে ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দে কলকাতায় নিজের
বেঙ্গল গেজেটিয়ার সংকলন অফিসে কেরানীর পদে নিযুক্ত করেন। এরপর ইনি উত্তর পশ্চিম প্রদেশের কৃষি ও বাণিজ্য
বিভাগের অফিসে প্রধান কেরানীর পদে নিযুক্ত হন। পরে বিভাগীয় ডাইরেক্টরের একান্ত সহকারী হন।
১৮৭৭-১৮৭৮ সালে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ হলে তিনি প্রান বাঁচানোর জন্য গাজর চাষ করার জন্য সরকারকে
উপদেশ দেন। তার কথানুযায়ী সরকার ১৮৮৭ সালে কয়েকটি জেলায় গাজরের চাষ করার বন্দোবস্ত করেন। এর ফলে দু বছর
পরে রায়বেরিলী ও সুলতানপুর জেলায় দুর্ভিক্ষের সময় তার প্রস্তাবিত গাজর চাষের জন্য বহু প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল।
১৮৮১ খ্রীষ্টাব্দে ভারত সরকারের রাজস্ব বিভাগে বদলী হন। সেই সময় ইনি উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পোন্নতির জন্য যথেষ্ট চেষ্টা
করেন এবং বিশেষ কৃতকার্যও হন। ১৮৮৩ সালে কলকাতায় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে কয়েকটি বিষয়ে অধ্যক্ষ ছিলেন। ১৮৮৬
সালে যুক্তরাজ্যে প্রদর্শনী আরম্ভ হয় তখন ত্রৈলোক্যনাথকে সেখানে পাঠানো হয়। সেই সময় তিনি ইউরোপের নানা জায়গায়
ভ্রমণ করেন এবং এ ভিজিট টু ইউরোপ নামক গ্রন্থ রচনা করেন। এই বইটিতে তার সমস্ত কাজ ও ভ্রমণ বৃত্তান্ত রয়েছে।
১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে এই বিভাগ ত্যাগ করে কলকাতা মিউজিয়ামে সহকারি কিউরেটর হন । ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে দেশীয় শিক্ষা
বাণিজ্যে যাতে উন্নতি হয় তার যথেষ্ট চেষ্টা করেন। কলকাতা, বোম্বে প্রভৃতি বড় বড় শহরে এবং বড় বড় রেলস্টেশনে ভারতীয়
কারুকার্যের যে সকল দোকান দেখতে পাওয়া যায় তা এঁর উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই সময় ইনি সরকারের অনুমতিক্রমে
আর্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অফ ইন্ডিয়া নামক একটি বই লেখেন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে যে সব শিল্প দ্রব্য নির্মিত হত সেই সব
শিল্প দ্রব্যের একটি তালিকা ইংরাজীতে প্রকাশ করেন। ত্রৈলোক্যনাথ বর্ধমানে থাকাকালীন ফার্সি ভাষা শিক্ষা করে অভূতপূর্ব নাম
করেছিলেন। ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে ইনি পেনসন গ্রহণ করেন। এবং ৭৩ বছর বয়সে ১৯১৯ খ্রীষ্টাব্দে তার মৃত্যু হয়।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া
PDF Collect